‘কেউই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে মানবিজ শহরে আসতে নিমন্ত্রণ করেনি। সিরিয়ার মানুষের অনুমতি ছাড়া সিরিয়ার মাটিতে আসা সকল বিদেশী সেনাই আগ্রাসনকারী। রাশিয়া ছাড়া আর কোন দেশের সামরিক উপস্থিতির অনুমতি সিরিয়ান সরকার ও জনগণ দেয়নি।’ শনিবার একটি সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। খবর সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সির।
চীনের ফিনিক্স টিভিকে দেয়া এ সাক্ষাত্কারটি শনিবার প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট আসাদ বলেন, যে কোন ভীণদেশী সৈন্যবাহিনী, সেটি আমেরিকা বা তুরস্ক যেটাই হোক, যারা আমাদের অনুমতি ছাড়া সিরিয়ার মাটিতে আসছে তারা আগ্রাসনকারী। দামেস্কো আলেপ্পোর মানবিজ শহরের দরজা আমেরিকার জন্য খুলে দিয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে আসাদ বলেন, ‘না, আমরা দেইনি।’ ‘তারা কি করতে যাচ্ছে? আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে? আমেরিকানরা প্রায় সব যুদ্ধে হেরেছে। তারা ইরাকে পরাজিত হয়েছে। এমন কি সোমালিয়া, ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানেও তারা হেরেছে।’ বলেন বাশার আল আসাদ।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কোথাও সৈন্য পাঠিয়ে সফল হয়নি দাবী করে আসাদ বলেন, আমেরিকা কেবল ঝামেলা তৈরি এবং ধ্বংসাত্মক কার্য করতে পারে। সমাধান দিতে তারা ভাল নয়। বাইরের শক্তি হস্তক্ষেপ না থাকলে কয়েক মাসে সিরিয়া যুদ্ধের অবসান হতে পারে বলে আসাদ বলেন। ‘বাইরের হস্তক্ষেপই সিরিয়া যুদ্ধকে জটিল রূপ দিয়েছে।’ চীনা ফিনিক্স টিভিকে বলেন বাশার আল আসাদ।
সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটকে নিয়ে বানানো একটি প্রামাণ্যচিত্রকে অস্কারের জন্য মনোনীত করার সমালোচনা করে আসাদ বলেন,’পশ্চিমারা আল নুসরা তথা আল কায়েদাকে অস্কার দিলো।’ সিরিয়ার পক্ষে জাতিসংঘে ভেটো দেয়ায় চীন ধন্যবাদ দিয়ে আসাদ বলেন, ‘যুদ্ধ পরবর্তী সিরিয়া গঠনে চীনের সহায়তা নেয়া হবে। জাতিসংঘে সিরিয়ার পক্ষে থেকে চীন আমেরিকার কবল থেকে সরক্ষার জন্য সকল ছোট দেশের পক্ষে থেকেছে। প্রেসিডেন্ট আসাদ বলেন, সিরিয়ার মাটিতে একমাত্র রাশিয়ার সেনা উপস্থিতিই সিরিয়া সরকারের অনুমতি নিয়ে করা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোয়ানের ব্যাপারে আসাদ বলেন, এরদোয়ান আল নুসরা ও আইএসের মতাদর্শিক সমর্থক। সবাই সেটা জানে।
সম্প্রতি তুর্কি সমর্থিত ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বিদ্রাহী গোষ্ঠী ও মার্কিন সমর্থিত কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের মধ্যে সংঘর্ষ নিবারণে সিরিয়ার মানবিজ শহরে কয়েকশ মার্কিন সেনা পাঠানো হয়েছে বলে পেন্টাগন স্বীকার করেছে। এর ফলে প্রথমবারের মত সিরিয়ায় রাশিয়া ও আমেরিকার সৈন্য একই সময়ে অবস্থান করছে। দায়েশের রাজধানী আর রাক্কা দখলে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় কি না সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে। অন্য দিকে দায়েশের কাছ থেকে আল বাব শহর দখলের পর তুরস্ক খোলাখুলি বলেছিল, ‘এবার টার্গেট রাক্কা…’।
আর্টিকেলটি নিয়ে মন্তব্য করুন