মঈনুল রাকীব, প্রাচ্যনিউজ ডটকম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত বিতর্কিত রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মুসলিম বিদ্বেষ, নারী বিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ, কৃষ্ণাঙ্গ বিদ্বেষ ও মেক্সিকান বিদ্বেষ তাকে ঘৃণার বরপুত্র হিসেবে আলোচনায় নিয়ে আসে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া নিয়ে খোদ আমেরিকাতেই রয়েছে নানা গুঞ্জন। তার বিজয়ে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে যা আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন। ক্যাফিফোর্নিয়াসহ পাঁচটি স্টেট স্বাধীনতার দাবিও তুলেছে। কারো মতে তিনি আসলে কট্রর ইহুদীবাদী, কারো মতে তিনি জায়োনিস্টদের পুতুল, আবার কারো মতে তিনি শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী। এতসব অভিযোগের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিপুলভাবে নিন্দিত হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ইহুদীরা তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। ধূর্ত ইহুদীরা নির্বাচনের আগেই কিছু কথা হিলারী ক্লিনটনের পক্ষে বললেও দিনশেষে ট্রাম্পের কাভারেজটি দিতো অনেক গুছিয়ে। কারণ নেতানিয়াহুসহ বড় বড় ইহুদী নেতারা জানতো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইহুদীদের রক্তের বন্ধন তৈরি হয়েছে। এই বন্ধনই ট্রাম্পকে ইসরাঈলের জন্য অপরিহার্য করে তুলেছিল। কিন্তু কি সেই রক্তের বন্ধন?
সেই বন্ধনের নাম ট্রাম্প-তনয়া ও ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি আইভাঙ্কা ট্রাম্প। কয় জন জানেন যে আইভাঙ্কা নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইহুদী ধর্মে বিশ্বাস স্থাপন করেছে? নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে হোয়াইট হাউজে যাওয়া নিশ্চিত করলে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজ ‘ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে যাচ্ছেন। আমরা কি আমেরিকার প্রথম ইহুদী প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করলাম?’ শীর্ষক একটি মতামত কলাম প্রকাশ করে। ২০ নভেম্বর ২০১৬ প্রকাশিত এই নিবন্ধটি লেখেন পুঁজিবাদী ইহুদী ব্যবসায়ী ওয়েইন এলেইন রুট। তিনি পুরো লেখাটিতে ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার জীবনাচার, আত্মকেন্দ্রিক ব্যবসা প্রবৃত্তি, ইসলামফোবিয়া, ইসরাঈলের প্রতি ট্রাম্পের ভালবাসা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘প্রথম মার্কিন ইহুদী প্রেসিডেন্ট’ বলে দাবি করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ের জামাই জারেড কুশনার একজন ইহুদী। তাকে বিয়ে করার আগেই ট্রাম্পকন্যা আইভাঙ্কা ট্রাম্প ইহদী ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। ফক্সের ঐ মন্তব্য প্রতিবেদনের মতে, ট্রাম্প তার সকল সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই ক্যাথলিক চার্চের বদলে ইহুদীবাদী নীতিতে শিক্ষিত করেছে। মেয়ে ইহুদী হয়ে যাওয়ার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প তা সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। অথচ ধূর্ত ইহুদীবাদী গণমাধ্যম এতদিন খুব সূক্ষ্মভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রতিক্রিয়াশীল খ্রীষ্টান হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। একজন কানজারভেটিভ ক্রিশ্চিয়ান কিভাবে মেয়ের কনজারভেটিভ ইহুদী হয়ে যাওয়াকে সাদর সম্ভাষণ জানায়? তার মানে সর্ষের মধ্যেই কি ভূত রয়েছে? ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই কি ইহুদীবাদী নীতিতে বিশ্বাসী? সেটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। ট্রাম্পের কথাবার্তা এবং ২০ জানুয়ারী ২০১৭ সালের পর তার কর্মই প্রমাণ করবে তার ইহুদীপন্থী স্বত্মার অস্তিতত্ত্ব’র কথা।
সাম্প্রতিক ইহুদীবাদী সংবাদমাধ্যমের মতে, ট্রাম্প-তনয়া আইভাঙ্কা আনুষ্ঠানিকভাবে ইহদী ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন দখল করে গঠিত অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাঈলের সর্বাধিক পঠিত অনলঅইন পোর্টাল ওয়াইনেট নিউজ ডটকম জানিয়েছে, আট বছর আগে ইহুদী ধর্মগুরু বা রাবাইয়ের কাছে কট্রর ইহুদী নিয়ম পালন করে ইহুদী হন আইভাঙ্কা ট্রাম্প। ম্যানহাটানের যে রাবাই আইভাঙ্কাকে ইহুদী ধর্মে দীক্ষিত করে তার নাম হাসকেল লুকস্টেইন। ইহুদীবাদী ইসরাঈলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরাঈল, হারেৎজ, জেরুজালেম পোস্ট ও ওয়াইনেটনিউজ ট্রাম্পের বিজয়ে উল্লাস করার কারণ ট্রাম্পের পরিবারে স্বীকৃত ইহুদী রয়েছে এবং ট্রাম্পের নাতি ও নাতনীরা সবাই জন্মহতভাবে ইহুদী। আমরা এতদিন জানতাম যে, ইহুদী কেবল জন্মগতভাবেই হওয়া সম্ভব। কিন্তু ইহুদীবাদী নীতি(Zionism) ইসরাঈলের কেন্দ্রিয় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার পর প্রাচীন বিশুদ্ধ রক্তনীতি থেকে ইহুদীরা সরে এসেছে গোপনে। তারা এখন যে কোন ধর্মের বা বিশ্বাসের মানুষকে গোপন ইহুদী আচার-প্রথার মাধ্যমে ইহুদী বানিয়ে নেয়। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ইহুদীদের সংবাদপত্র ‘ফরোয়ার্ড’ (জিউশ ডেইলি ফরোয়ার্ড নামেও পরিচিত। অনলাইনে ফরোয়ার্ড ডটকম।) প্রতিটি সংবাদের উপরই একটি বিজ্ঞপ্তি রাখে।
এতে লেখা থাকে ‘ ইহুদী হওয়ার নানা উপায় আছে’(There are many ways to be jewish)। এই বিজ্ঞপ্তির নিচেই আছে খাদ্য, সংষ্কৃতি, রাজনীতি, প্রথা ও পরিবার ট্যাব। মানে এগুলোর মাধ্যমে ইহুদীদের বলে দেয়া পথে যে কেউ এখন ইহুদী হতে পারে।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ইসরাঈলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে ইহুদীদের অবকাশ উৎসব হানুক্কায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে আইভাঙ্কা। আইভাঙ্কা ট্রাম্প কট্ররপন্থী তথা অর্থডক্স জুদায়িজমে ধর্মান্তরিত হয়ে হিব্রু নাম ইয়েল কুশনার গ্রহণ করেন। ইহুদীবাদি ওয়াইনেটনিউজের তথ্যমতে, আইভাঙ্কা গোঁড়া ইহুদীদের ধর্মীয় নীতি শাব্বাত ও কাশরুত কঠোরভাবে পালন করে একজন ‘প্রাকটিসিং ইহুদী নারী’ হিসেবে জীবনযাপন করেন। তার তিন সন্তানের নাম আরাবেল্লা, জোসেফ ও থিওডোর এবং তারা সকলেই ইহুদী ধর্মে দীক্ষিত বলে ইহুদী টেম্পলে নিবন্ধিত। এর মানে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প যার রক্তধারা ইহুদীদের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এখন কেউ যদি বলে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে ( ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন প্রভৃতি দেশের সংকট) চুপ করে থাকবে সে ভুল বলে। কারণ নাতি-নাতনী ও মেয়ে যে ধর্মে দীক্ষিত সেই ইহুদীদের স্বার্থের বাইরে একটি পা-ও ফেলতে পারবেনা ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ ঘরের মধ্যে থেকেই আসবে বিশ্ব পরিচালনার নীতি। আর ঘরের মধ্যে কোন মানবতাবাদী নেই, কোন খ্রীষ্টান নেই, কোন সেক্যুলার নেই, কোন হিন্দু নেই, কোন বেীদ্ধ নেই, কোন মুসলিম নেই। আছে মানবতার জন্য হুমকি ইহুদীবাদী। মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতি-নাতনী সবাই ইহুদী।
ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের ইহুদী হওয়া সম্পর্কে গণমাধ্যমকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে আইভাঙ্কা ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘খ্রীষ্টান থেকে ইহুদী হওয়ায় আমার পিতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মতি ছিল।’ মার্কিন নির্বাচনের ঠিক আগের দিন ইহুদী রাবাই লুবাভিটচের এর সমাধিতে গিয়ে ইহুদী ধর্মানুযায়ী ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য প্রার্থনাও করে আসেন ট্রাম্পকন্যা। এসময় তার সাথে ছিলেন স্বামী কুশনার ও ট্রাম্পের ইসরাঈল বিষয়ক উপদেষ্টা জেশন গ্রিনব্লট। সেসময় অনেকেই এ বিষয়ে কানাঘোঁষা করেছিলো। গত ২৬ ডিসেম্বর যখন সমগ্র আমেরিকায় ক্রিসেমাসের আনন্দের ছোঁয়া তখনও কিন্তু ট্রাম্পের কন্যা ইহুদী উৎসব পালন করেছে।
এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে তেমন কোন সংবাদ হয়নি। কারণ সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৯৬ শতাংশ গণমাধ্যমের সাথে কোন না কোনভাবে ইহুদীরা জড়িত। আমেরিকায় এমন একটি কথা প্রচলিত আছে যে, ‘ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপনি ঈশ্বরের সমালোচনা করতে পারবেন, কিন্তু ইহুদীদের সমালোচনা করতে পারবেননা।’
ইহুদীদের হলিডে উৎসব হানুক্কা পালন করছেন ধর্মানন্তরিত আইভাঙ্কা । ছবি/ওয়াইনেটনিউজ।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে, এফবিআই, সিআইএ, গণমাধ্যম কোথায় ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণ নেই? আমেরিকা ও ইসরাঈলের দ্বৈত নাগরিকরে সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আরোহনের পর আমেরিকা ইসরাঈলের আজ্ঞাবহ হতে সময় নেবে বলে মনে হয়না। কারণ ডেমোক্রেটিক ওবামা প্রশাসনের সাথে ইহুদীবাদী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রকাশ্য বিরোধ আমরা দেখেছি। আবার গত সপ্তাহে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের ভূখন্ডে ইসরাঈলে অবৈধ বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে মিশরের আনা প্রস্তাবটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ত্ব নেয়ার আগেই ট্রাম্প বাঁধা সৃষ্টি করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘ আমার মেয়ে এবং নাতি-নাতনী ইহুদী এতে আমি গর্বিত।’। দুই পুত্র এরিক ট্রাম্প ও ট্রাম্প জুনিয়র ব্যবসা থেকে উপার্জিত ডলারের একটি অংশ ইহুদী সংগঠনগুলোতে দিয়ে থাকেন।
এসব কারণে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা শঙ্কিত যে, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না ইসরাঈলের স্বার্থে? ইতোমধ্যেই ট্রাম্প ইরানের সাথে আমেরিকার ঐতিহাসিক চুক্তি ভেঙে দিতে চেয়েছেন। এছাড়া নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সর্বপ্রথম সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইসরাঈলের গণমাধ্যম ‘ইসরাইলহায়ম’কে। এই পত্রিকাটির মালিক একজন আমেরিকান ইসরাঈলী ইহুদীবাদী। তার নাম শেলডন এডিলসন। তিনি পেশায় ক্যাসিনো ব্যবসায়ী এবং ইহুদীবাদী রিপাবলিকানদের গুরুত্ত্বপূর্ণ অর্থ জোগানদাতা। তিনি হিলারী ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ক্যামপেইনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢেলেছেন বলে ফরোয়ার্ড প্রতিবেদন করেছিল। তারমানে হচ্ছে, প্রথম নারীকে বাদ দিয়ে আমেরিকান জনগণ নির্বাচিত করেছে প্রথম মানসিক ইহুদীকে।
আগামী ২০ জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ত্ব গ্রহণ করবেন ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের প্রশাসনে গুরুত্ত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছেন এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি ইহুদী বলে ট্রাম্পবিরোধীদের শঙ্কা। অন্ততপক্ষে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থেকে ট্রাম্পকে প্রভাবিক করবেন যারা তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হচ্ছেনঃ ট্রাম্পের আইনজীবী জেশন গ্রিনবল্ট, দীর্ঘদিনের এটর্নি ডেভিড ফ্রাইডম্যান, নিউইয়র্ক অবজার্ভাবের সম্পাদক ও ট্রাম্পের মেয়েজামাই জেরার্ড কুশনার, টকশো ব্যক্তিত্ত্ব বরিশ ইপসটেইন, সংগঠক স্টিফেন মিলার, ট্রাম্পের অর্থনীতি বিষয়ক চেয়ারম্যান স্টিফেন নুচিন, রিপাবলিকান দলের নীতিনির্ধারক লুইস আইসেনবার্গ, রাজনৈতিক নির্দেশক মাইকেল গ্লাসনার প্রমুখ। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এরা সকলেই জন্মগতভাবে ইহুদী এবং ইসরাঈলী স্বার্থ সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। এর সঙ্গে ধর্মান্তরিত ইহুদী হিসেবে যোগ দেবেন কন্যা আইভাঙ্কা ট্রাম্প। ইতোমধ্যেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা।
কি করবেন ট্রাম্প ক্ষমতা পাওয়ার পর? তিনি কি ইরানের সাথে চুক্তি বাতিল করে ইসরাঈলের পরামর্শে ইরানে হামলা করবেন? ইসরাঈল বিরোধী বাশার আল আসাদকে উচ্ছেদ করতে সিরিয়ায় নো ফ্লাইজোন গঠন করবেন? জায়োনিস্ট বলয় থেকে বেরিয়ে যাওয়া জার্মানিকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করবেন? ফিলিস্তিনের উপর ইসরাঈলী বর্বর ডিফেন্স ফোর্সকে আক্রমণ চালাতে অনুমতি দেবেন? তিনি কি তুরস্ক ও ইরাক ভেঙে ইসরাঈলপন্থী স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠন করতে প্রকাশ্যে ব্যবস্থা নেবেন? ইরানের সাথে শত্রুতা জিইয়ে রেখে রাশিয়ার সাথে কতদিন চলবেন তিনি? রাশিয়ার অর্থডক্স খ্রিস্টানদের সাথে জায়োনিস্টদের মতাদর্শিক বিরোধকে কিভাবে সামলাবেন ট্রাম্প? চীনের সাথে সম্পর্ক কতটুকু ভাল থাকবে ভারতের সাথে দহরম মহরম করে? পাকিস্তান যদি রাশিয়া ব্লকে চলে যায় সেটা তিনি কিভাবে নেবেন? সর্বপরি নিরাপত্তা পরিষদকে ব্যবহার করে চলমান ফিলিস্তিন-ইসরাঈল দ্বন্দ্বে তিনি ঠিক কিভাবে নিজের মেয়ের বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেবেন?
এসব প্রশ্নে উত্তর জানতে আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কি হয় সেটা আমরা বলতে পারিনা, তবে অনুমান করা যায় মানবসভ্যতার জন্য ২০১৭ সালটি খুবই ভয়ঙ্কর কোন কিছু বয়ে আনতে পারে। কারণ আধুনিক মানুষের ইতিহাসে এই প্রথম চলমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কোন সুপারপাওয়ার রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সরাসরি ইহুদীদের সাথে সম্পৃক্ত। সেই সম্পৃক্ততা মানবতার জন্য ভাল কিছু আনবে কি? ইতিহাস ঘাঁটলে ক্ষমতাসীন অসাধু ইহুদীপন্থী বা ইহুদীদের দ্বারা মানবকল্যাণমূলক কিছু হয়েছে বলে পাওয়া যায়?
লেখকঃ স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপসম্পাদক, প্রাচ্যনিউজ ডটকম।
আর্টিকেলটি নিয়ে মন্তব্য করুন