ধর্ম থেকে যদি আপনি উৎসবকে আলাদা করতে যান তাহলে উৎসব থেকে স্পিরিচুয়ালিটি হাওয়া হয়ে যায়। ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই আপ্তবাক্যের বিপদ এখানেই।
হোলি কখনো বাঙলার উৎসব নয়। হোলিকা রাক্ষসী আর রাসলীলার গালগল্প বাঙলা কখনো গ্রহণ করেনি। বাঙলা দোল পুর্নিমা দিয়ে বসন্তকে বরণ করতো। এই দোল পুর্নিমার এক অসাধারণ দার্শনিক তাৎপর্য আছে।
বসন্তে প্রকৃতি রঙ এ সাজে, মানুষ তো প্রকৃতির অংশ। তার রঙ কোথায়? তাই সে নিজেকে রঙ এ রাঙিয়ে প্রকৃতির সাথে একাত্মতা অনুভব করে। দোল পুর্নিমা এই একত্বের অনুভুতি দেয়।
হোলি হিন্দি সংস্কৃতি, হিন্দু সংস্কৃতি নয়, বাঙলার তো নয়ই। এটা আমাদের দেশে এসেছে আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে। হিন্দি সিনেমার হোলি দৃশ্যের ছ্যাবলামি সহ। সিলসিলা সিনেমায় সিদ্ধি খেয়ে অমিতাভের রেখার সাথে ছাবল্যামো বাঙালি মধ্যবিত্তের আইকন হয়ে উঠেছে। যে নিজে কিছুই হয়ে উঠতে পারেনি সে এক বোতল কালি নিয়ে নিজেকে অমিতাভ আর পথ চলতি নারীকে রেখা ভেবে নিয়েছে।
আরে বেকুব, তুই কিছুই হইতে পারিস নাই। মাঝখানে নিজের সংস্কৃতি হারাইয়া শিখছিস ছ্যাবলামো।
হোলির নামে বখাটেদের লাম্পট্য আর নারী নিগ্রহের নিন্দা জানাই। হিন্দু ধর্মের ধর্মগুরুদের আহবান জানাই বাঙলার সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কহীন হোলির বদলে দোল পুর্নিমার মহৎ আদর্শকে উদযাপনের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়কে উদ্বুদ্ধ করুন। পুর্ন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে দোল পুর্নিমা উদযাপন করুন। বখাটেপনা যেন ধর্মীয় উৎসবকে কলঙ্কিত না করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিন।
লেখকঃ চিকিৎসক, জনপ্রিয় সমালোচক
আর্টিকেলটি নিয়ে মন্তব্য করুন